আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপর,ঝুঁকি এড়াতে তৎপর প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড

 

মোহাম্মদ আককাস আলী :


 উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে নওগাঁর নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি আশঙ্কাজনক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্য আত্রাই নদীর দুটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


অপরদিকে দিনে ও রাতে নদী সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো পর্যবেক্ষণ করা এবং জরুরী অবস্থায় করনীয় বিষয়ে স্থানীয়দের সচেতন করাসহ নানা বিষয়ে তৎপরতা চলমান রেখেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। তবে এখন পর্যন্ত কোথাও বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার কোন আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল। এদিকে জরুরী অবস্থা মোকাবেলা করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা আছে বলে জানিয়েছেন রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাকিবুল হাসান।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা লাগাতার ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার ফলে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার পতিসর-সমসপাড়া পাকারাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ওই এলাকার কয়েক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল জানান, নওগাঁ জেলার আত্রাই নদীর উজানে শিমুলতলী, মহাদেবপুর ও জোতবাজার পয়েন্ট পানি সমতল কমতে শুরু করেছে এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কোন অংশ ব্রীচ/ভেঙ্গে যায় নাই।

এছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে কোন লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে নাই। শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুর ১২টায় ছোট যমুনা নদীর লিটন ব্রীজ পয়েন্টে পানি সমতল বিপদ সীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, আত্রাই নদীর শিমুলতলী পয়েন্টে পানি সমতল বিপদ সীমার ১৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে,


আত্রাই নদীর মহাদেবপুর পয়েন্টে পানি সমতল বিপদ সীমার ১২০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, আত্রাই নদীর জোত বাজার পয়েন্টে পানি সমতল বিপদ সীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে ও আত্রাই নদীর রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে পানি সমতল বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে সম্প্রতি উজানে ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানি তেমন একটা বৃদ্ধি পাচ্ছে না। উজানে ভারী বৃষ্টিপাত না হলে এবং আবহাওয়া শুষ্ক থাকলে দ্রুতই নদীর পানি কমতে শুরু করবে বলে তিনি জানান।


তিনি আরো জানান, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই আত্রাই উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ রসুলপুর, সদুপুর, লালুয়া, বেওলা, নন্দনালী, জগদাস, শিকারপুর, দুবাই, গুরনৈ এবং রাণীনগর উপজেলার নান্দাইবাড়ি, কৃষ্ণপুর, ঘোষগ্রামসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো দিনে এবং রাতে পরিদর্শন করা হচ্ছে। বিশেষ করে রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাকিবুল হাসানের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রাকিবুল হাসান জানান, জেলা প্রশাসক স্যারের সার্বিক নিদের্শনা মোতাবেক সব সময়ই আত্রাই ও ছোট যমুনা নদীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো পরিদর্শন অব্যাহত রাখা হয়েছে। ইতিপূর্বে রাণীনগর উপজেলার ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ বেরিবাঁধ মেরামত করা হয়েছে। তাই রাণীনগর উপজেলায় ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধিতে তেমন একটা ভয় নেই।

এছাড়া আত্রাই উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোও সব সময় পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে। প্রশাসন যে কোন সমস্যায় সব সময় মানুষের পাশে আছে। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সর্বাত্মকভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষার্থে চেষ্টা চালিয়ে যাবে। প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে একটি করে দল গঠন করা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন